Your Cart

Your cart is empty

Go find your favorite products and add them to the cart.

Continue Shopping

Sub Total

Tk


Proceed to Checkout

ডায়াবেটিস কী? লক্ষণ, কারণ ও প্রতিকার এক নজরে

ডায়াবেটিস কী? লক্ষণ, কারণ ও প্রতিকার এক নজরে

বর্তমান যুগে ডায়াবেটিস এমন একটি রোগ, যা ধীরে ধীরে নীরব ঘাতক হিসেবে মানুষের শরীরকে ক্ষয় করে দেয়। আমাদের দেশে প্রতি বছর হাজার হাজার মানুষ এই রোগে আক্রান্ত হচ্ছে, এবং দুর্ভাগ্যবশত অনেকেই সঠিক সময়ে রোগটি শনাক্ত করতে না পারায় নানা জটিলতা দেখা দেয়। তাই এই লেখায় আমরা জানব, ডায়াবেটিস আসলে কী, এর লক্ষণ কী কী, কী কারণে হয় এবং কীভাবে প্রতিকার বা নিয়ন্ত্রণ করা যায়।

 

ডায়াবেটিস কী?

 

ডায়াবেটিস, যাকে বাংলায় বহুমূত্র রোগ বলা হয়, এটি একটি দীর্ঘমেয়াদি মেটাবলিক রোগ। এই রোগে শরীর পর্যাপ্ত ইনসুলিন তৈরি করতে পারে না বা ইনসুলিন যথাযথভাবে ব্যবহার করতে পারে না। ইনসুলিন হলো একটি হরমোন, যা রক্তে গ্লুকোজের পরিমাণ নিয়ন্ত্রণে রাখে। ইনসুলিনের ঘাটতির ফলে রক্তে শর্করার পরিমাণ বেড়ে যায়, যেটি নিয়মিতভাবে বেশি থাকলে তা চোখ, কিডনি, হার্ট, স্নায়ু সহ শরীরের নানা অঙ্গকে ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে।

 

ডায়াবেটিসের ধরণ

 

ডায়াবেটিস মূলত তিন ধরনের হতে পারে:

 

  1. টাইপ-১ ডায়াবেটিস: সাধারণত শিশু ও তরুণদের মধ্যে দেখা যায়। এতে শরীর ইনসুলিন তৈরি করতেই পারে না।
  2. টাইপ-২ ডায়াবেটিস: এটি সবচেয়ে সাধারণ ধরণ, সাধারণত প্রাপ্তবয়স্কদের মধ্যে দেখা যায়। এখানে শরীর ইনসুলিন তৈরি করলেও সেটি সঠিকভাবে কাজ করে না।
  3. গেস্টেশনাল ডায়াবেটিস: গর্ভাবস্থায় কিছু মহিলার মধ্যে এই ডায়াবেটিস দেখা দেয়, যা পরে সেরে যায় তবে ভবিষ্যতে টাইপ-২ হওয়ার ঝুঁকি থেকে যায়।

 

ডায়াবেটিসের সাধারণ লক্ষণসমূহ

 

ডায়াবেটিসের প্রাথমিক কিছু লক্ষণ রয়েছে, যা সময়মতো চেনা গেলে দ্রুত চিকিৎসা শুরু করা সম্ভব। যেমন:

 

  1. বারবার প্রস্রাব হওয়া
  2. অতিরিক্ত পিপাসা লাগা
  3. ওজন কমে যাওয়া
  4. অতিরিক্ত ক্লান্তি বা দুর্বলতা
  5. ক্ষুধা বেড়ে যাওয়া
  6. চোখে ঝাপসা দেখা
  7. ক্ষত ধীরে সারে
  8. চামড়ায় চুলকানি বা সংক্রমণ হওয়া

এই লক্ষণগুলোর যেকোনো একটি থাকলে দ্রুত ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া উচিত।

 

ডায়াবেটিস হওয়ার কারণ

 

ডায়াবেটিস হঠাৎ করে হয় না। এটি বিভিন্ন অভ্যাস ও শারীরবৃত্তীয় কারণে হয়ে থাকে:

 

  1. পরিবারে পূর্ব ইতিহাস থাকলে
  2. অনিয়মিত জীবনযাপন
  3. অতিরিক্ত ওজন বা স্থূলতা
  4. উচ্চ রক্তচাপ
  5. শরীরচর্চার অভাব
  6. মানসিক চাপ
  7. অনিয়ন্ত্রিত খাদ্যাভ্যাস (চিনি ও কার্ব সমৃদ্ধ খাবার বেশি খাওয়া)

 

প্রতিকার ও নিয়ন্ত্রণের উপায়

 

ডায়াবেটিস চিকিৎসা মানে শুধুই ওষুধ নয়, বরং এটি একটি জীবনধারা পরিবর্তনের বিষয়:

 

  1. সুষম খাদ্যাভ্যাস: শর্করাহীন ও ফাইবার সমৃদ্ধ খাবার খেতে হবে। করলা, মেথি, কালোজিরা, ওটস ইত্যাদি উপকারী।
  2. নিয়মিত ব্যায়াম: প্রতিদিন অন্তত ৩০ মিনিট হাঁটা বা হালকা ব্যায়াম করুন।
  3. ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখা: অতিরিক্ত ওজন ডায়াবেটিসের বড় কারণ। ওজন কমাতে হবে।
  4. চিনি ও প্রসেসড খাবার পরিহার: মিষ্টি, কোমল পানীয়, প্যাকেটজাত খাবার এড়িয়ে চলা উচিত।
  5. স্ট্রেস ম্যানেজমেন্ট: মানসিক চাপ কমাতে মেডিটেশন বা রিলাক্সেশন প্র্যাকটিস করুন।
  6. ডাক্তারের পরামর্শে নিয়মিত চেকআপ: ব্লাড সুগার নিয়মিত মেপে দেখা এবং প্রয়োজনে ওষুধ সেবন করা।

 

শেষ কথা

 

ডায়াবেটিস এমন একটি রোগ, যা নিয়ন্ত্রণে থাকলে দীর্ঘ ও সুস্থ জীবনযাপন সম্ভব। সময়মতো সচেতনতা, সঠিক খাবার, নিয়মিত শরীরচর্চা ও ডাক্তারের পরামর্শ মেনে চললে আপনি সহজেই ডায়াবেটিসকে নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারবেন।

নিজের জন্য নয়, প্রিয়জনের সুস্থতার জন্য – আজ থেকেই স্বাস্থ্যকর অভ্যাস শুরু করুন।